728X90

0

0

0

0

0

0

0

0

0

এই অনুচ্ছেদে

বাচ্চাকে গরুর দুধ খাওয়াচ্ছেন? সঙ্গে দিচ্ছেন এই 6 খাবার? বিপদ এড়াতে এখনই জানুন
8

বাচ্চাকে গরুর দুধ খাওয়াচ্ছেন? সঙ্গে দিচ্ছেন এই 6 খাবার? বিপদ এড়াতে এখনই জানুন

কী খাওয়াচ্ছেন আপনার সন্তানকে? যা খাওয়াচ্ছেন, তা আদৌ তার পুষ্টির জন্য ভাল? অন্য কোনও বিপদ ডেকে আনছে না তো? সন্তানকে কী খাওয়াবেন না, জেনে নিন।

Foods to avoid for babies

গর্ভাবস্থায় থাকা থেকে জীবনের প্রথম দুই বছর শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এই সময়কালকে বলা হয় ‘প্রথম হাজার দিন’, যা বাচ্চার বেড়ে ওঠার জন্য সবথেকে জরুরি। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন দ্বারা প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, এই সময়ে শিশুর অন্ত্রের জীবাণু একাধিক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়।

এই প্রাথমিক সময়কালে বা বছরগুলিতে শিশুর মস্তিষ্কের দ্রুত বিকাশ ঘটে। ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাদের নিউরন অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সংযোগ তৈরি করে, যা পরে আর হয় না। আর সেই প্রক্রিয়াকে আরও সাহায্য করার জন্য বাবা-মাকে তাঁদের সন্তানকে সঠিক খাবার দেওয়ার কাজটাও জরুরি হয়ে যায়। সেই সঙ্গেই আবার বাচ্চার জন্য সর্বোপরি তার খাবারের দিক থেকে সূচনাটাও খুব ভাল হওয়াটা মা-বাবার জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

ভাল ও মন্দের মধ্যে বিভ্রান্তি

মায়েদের সবসময় চিন্তা থাকে, সন্তানের জন্য কোন খাবারটা ভাল হতে পারে তার নির্বাচন করতে গিয়ে। যতটা যত্ন নেওয়া সম্ভব খাবারের দিক থেকে, তারা ততটাই নেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের বিভ্রান্তও হতে হয়। কারণ, পরিবারের লোকজন থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব অযাচিত কিছু পরামর্শ দেন। তার মধ্যে কোনটি ভাল হতে পারে, চিন্তার বিষয় হয়ে যায় মায়েদের জন্য। সেই কারণেই বাচ্চাকে কী খাওয়াবেন, তা ঠিক করার আগে সবসময় একজন পেশাদারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

হায়দরাবাদের লিটল ওয়ান্ডার্স ক্লিনিকের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মেঘনা রামারাজু এবং মধ্যপ্রদেশের ভোপালের শিশু পুষ্টিবিদ ডাঃ নিশা ওঝার সঙ্গে কথা বলা হয় হ্যাপিয়েস্ট হেলথের তরফে। তাঁরা দুজনেই একাধিক খাবার সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, যেগুলি কখনই বাচ্চাদের দেওয়া উচিত নয়।

গরুর দুধ

শিশুর পরিপাকতন্ত্র খুবই সূক্ষ্ম এবং তা শুধুমাত্র মানুষের দুধ হজম করতে সক্ষম। NCBI-তে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানুষের দুধের গঠন অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের থেকে পরিবর্তিত হয়। মানুষের দুধে লিপিড, খনিজ, ভিটামিন এবং ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে, যা একজন সদ্যোজাতের প্রয়োজন। তাই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে বাচ্চাদের পুষ্টির প্রাথমিক উৎস হিসেবে কেবল মায়ের দুধই সুপারিশ করে।

গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, 6 থেকে 11 মাস বয়সী শিশুদের গরুর দুধ দিলে অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়। এমন প্রমাণও মিলেছে যেখানে গরুর দুধ বা গরুর দুধ-ভিত্তিক ফর্মুলা প্রয়োগের ফলে নবজাতকের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছে। ডাঃ রামারাজু বলছেন, বাচ্চাদের মাতৃদুগ্ধ পান করানোই ভাল, যা থেকে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি পাওয়া যায়।

চিনি

শিশুর খাবারে চিনি কখনই দেওয়া উচিত নয়। ডাক্তাররা সুপারিশ করে থাকেন, শিশুর বয়স যতক্ষণ না দুই হচ্ছে বা যতক্ষণ না সে শক্ত খাবার খাচ্ছে, ততক্ষণ তার খাবারে চিনি দেওয়া উচিত নয়। চিনি খাবারে ক্যালোরির মাত্রা বাড়ায় এবং ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তোলে। WHO-এর তরফ থেকে বলা হয়েছে, খাবারে চিনির ব্যবহার তার পুষ্টির মানকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি যে কেবলই স্থূলতা সম্পর্কে উদ্বেগ বাড়ায়, তা নয়। সেই সঙ্গেই আবার ডেন্টাল ক্যারিসের মতো অবস্থারও ঝুঁকি বাড়ায়।

ডাঃ ওঝা বলছেন, পরিশোধিত চিনির ব্যবহার শৈশবকালীন স্থূলতা, হাইপারঅ্যাক্টিভিটি এবং কার্ডিয়াক সমস্যার প্রাথমিক সূত্রপাতের সঙ্গে যুক্ত। চিনির পরিবর্তে তিনি বাচ্চাদের জন্য খেজুরের গুঁড়ো, ফলের পিউরি (কলা, আপেল, স্ট্রবেরি), ডুমুর পিউরি, কিশমিশ পিউরি বা পাকা এপ্রিকট পিউরি ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

মধু

মধু, চিনির একটি প্রাকৃতিক উৎস হওয়া সত্ত্বেও তা নবজাতকদের মারাত্মক ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই ঝুঁকি মূলত ক্লোস্ট্রিডিয়াম বোটুলিনাম থেকে উদ্ভূত হয়, একটি জীবাণু যা বোটুলিজম ঘটাতে সক্ষম। ডাঃ রামারাজু বলছেন, এই জীবাণু যদি শরীরে বাসা বাঁধে তাহলে তা অন্ত্রের অচলতা এবং ধীরে ধীরে পক্ষাঘাত পর্যন্ত ঘটায়। একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, সদ্যোজাতদের মধু খাওয়ানোর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে।

নুন

ডাঃ ওঝা এবং ডাঃ রামরাজু দুজনেই বলছেন, 6 থেকে 12 মাস বয়সী শিশুদের এক্কেবারেই লবণ দেওয়া উচিত নয়। এমনকি, তাঁরা প্রাপ্তবয়স্কদেরও অত্যধিক লবণ খেতে বারণ করছেন। কারণ, এটি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। শিশুদের খাবারে নুন দিলে তা তাদের উন্নয়নশীল কিডনির জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায় এবং সর্বোপরি পরবর্তী জীবনে নোনতা খাবারের প্রতি পছন্দ বাড়াতে পারে।

ডিম

ডিম সদ্যোজাতদের অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যদি তার মা-বাবার অ্যালার্জি থাকে। ডাঃ রামারাজু বলছেন, আপনার বাচ্চা একটু বড় হলে তাকে ডিমের সাদা অংশের পরিবর্তে কুসুমের সঙ্গে পরিচয় করাতে পারেন। পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, ডিমের কুসুম তার পছন্দ হচ্ছে কি না, সহ্য হচ্ছে কি না। এই একই সতর্কবার্তা সামুদ্রিক খাবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ডাঃ রামারাজু যোগ করে বললেন, “এই ধরনের খাবারের সঙ্গে বাচ্চাদের ধীরে-ধীরে পরিচয় করানো উচিত। কোনও অ্যালার্জি দেখা দিলেও তার নিবিড় পর্যবেক্ষণও প্রয়োজন। যদি কোনও অ্যালার্জি ধরা না পড়ে, তাহলে আপনি সেগুলো শিশুকে খাওয়াতে পারেন।”

বাদাম ও বীজ

কোনও খাবার যখন গলায় আটকে যায়, তখন তা শ্বাসনালীতে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং হঠাৎই অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হওয়ার ফলে দমও বন্ধ হয়ে যায়। যে কোনও ধরনের বাদাম ও বীজ কিন্তু এরকমই উপাদান, যা খেলে বাচ্চার গলায় আটকে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থেকে যায়। ডাঃ রামরাজুর মতে, “আপনার শিশুকে খাওয়ানোর সময় যে কোনও খাদ্য কণা যদি আঙ্গুলের মধ্যে চেপে না ধরা যায়, তাহলে তাকে দম বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।”

প্যাকেটজাত খাবার

সাধারণ খাবারকে প্যাকেটজাত কর হয়, তা যাতে দীর্ঘদিন টেকসই হয় সেটা নিশ্চিত করতে, স্বাদ বাড়াতে এবং সতেজতা ধরে রাখতে। কিন্তু তা করতে গিয়ে খাবারে এমনই সব রাসায়নিক প্রবেশ করানো হয়, যা শিশুর খাবারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাই, শিশুকে প্যাকেটজাত খাবার না দেওয়াই ভাল। কারণ, তারা অ্যাডেটিভের নেতিবাচক প্রভাবের জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে, শিশুর শারীরিক বিকাশে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে। ফ্লেভারড মিল্ক ও দই (যোগ করা চিনি এড়াতে), প্যাকেজড্ চিপস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই (অতিরিক্ত লবণ এবং ট্রান্স-ফ্যাট সামগ্রীর জন্য) এবং রেডিমেড খাবার (অতিরিক্ত লবণের পরিমাণ যা একটি শিশুর দৈনিক চাহিদার চেয়ে বেশি) এড়ানোর জন্য জোর দেন। ডাঃ রামরাজুও তাতে সম্মত হন এবং তিনি সুপারিশ করছেন, সমস্ত অভিভাবকদের উচিত বাচ্চাকে বাড়িতে তৈরি খাবার দেওয়া। এমনকি, বাইরে গেলেও বাচ্চার জন্য বাড়ি থেকে খাবার বানিয়ে নিয়ে যাওয়াই ভাল।

সম্পর্কিত ট্যাগ
সম্পর্কিত পোস্ট

আপনার অভিজ্ঞতা বা মন্তব্য শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এখন খবরে

প্রবন্ধ

প্রবন্ধ
দাঁত এবং মাড়ির স্বাস্থ্য খারাপ হলে সংক্রামক এন্ডোকার্ডাইটিস হতে পারে অর্থাৎ হার্ট ভালভের আস্তরণের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। 
প্রবন্ধ
ছেলের বয়স 20 ছোঁয়নি, কিন্তু মাথায় একগাদা পাকা চুল। কেন হয় এমনটা, চুল পাকার স্বাভাবিক বয়সই বা কত, এই সব প্রশ্নের উত্তরই জেনে নেওয়া যাক।
প্রবন্ধ
ব্যায়াম নারীদের হাড় মজবুত রাখতে এবং হরমোনের ওঠানামা প্রতিরোধে সাহায্য করে। বাড়িতে 40 মিনিটের ব্যায়াম মহিলাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
প্রবন্ধ
যোগায় হস্তমুদ্রা শুধুমাত্র ভঙ্গিমা নয়, প্রতিটি মুদ্রার নিজস্ব স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
প্রবন্ধ
ছয় বছরের মধ্যে দুবার কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী কলকাতার সেই ব্যবসায়ী এর মধ্যেই রোমাঞ্চের স্বাদও নিতে বেরিয়ে পড়েছেন।
প্রবন্ধ
ডার্মাটোমায়োসাইটিসের প্রাথমিক লক্ষণ, ত্বকের ফুসকুড়ি, পেশির দুর্বলতার মতো বেশ কিছু বিষয়। কিন্তু কখনও তা রক্ত সঞ্চালন প্রভাবিত করে, আবারও কোলন ক্যান্সারও ডেকে আনতে পারে।

0

0

0

0

0

0

0

0

0

Opt-in To Our Daily Healthzine

A potion of health & wellness delivered daily to your inbox

Personal stories and insights from doctors, plus practical tips on improving your happiness quotient

Opt-in To Our Daily Healthzine

A potion of health & wellness delivered daily to your inbox

Personal stories and insights from doctors, plus practical tips on improving your happiness quotient
We use cookies to customize your user experience, view our policy here

আপনার প্রতিক্রিয়া সফলভাবে জমা দেওয়া হয়েছে.

হ্যাপিস্ট হেলথ টিম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার কাছে পৌঁছাবে।